আমরা হার মানবো না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি দেশবাসীকে বলবো- স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যা যা নির্দেশনা সেগুলো মেনে চলে নিজের জীবনকে চালাতে হবে। নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, অপরকেও সুরক্ষিত রাখার বিষয়টাও মাথায় রাখতে হবে। সেটা যেন সবাই করে। সোমবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই আমাদের মানুষের মাঝে যেন একটা আস্থা থাকে, বিশ্বাস থাকে, সেই বিশ্বাস-আস্থাটা ধরে রাখতে হবে। আমরা হার মানবো না, মৃত্যু তো হবেই, মৃত্যু যেকোনো সময় যেকোনো কারণে হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ভীত হয়ে হার মানতে হবে? এই ধরনের একটা অদৃশ্য শক্তির কাছে এটাতো না। সে জন্য আমাদেরও সেভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে মানুষকে বাঁচানো, আবার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, শিক্ষার ব্যবস্থা সেগুলোতে যাতে ঠিক থাকে সেদিকেও আমরা বিশেষভাবে লক্ষ রাখছি। আমি বারবার মানুষের মাঝে যাই এই কারণে। আজ ডিজিটাল পদ্ধতি আছে বলে আমি যেতে পারছি, কথা বলতে পারছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছিলাম বলে আজ করোনা নামে একটা ভাইরাস সারাবিশ্বকে একেবারে স্থবির করে দিয়েছে তারপরও আমরা আমাদের দেশের মানুষের সেবা করতে পারছি। তাদের জন্য কাজ করতে পারছি। তাদের চিকিৎসাসেবা দেয়া থেকে শুরু করে, আর্থিক সহায়তা দেয়াসহ সব ধরনের সুযোগ আমরা দিতে পারছি। যেহেতু আজ সত্যিই বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছি। সেদিক যে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। এটা আমাদের আনন্দের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আর দুঃখের বিষয় হলো যারা প্রতিনিয়ত আমার জন্য কাজ করে আমি তাদের কাছে যেতে পারছি না। দূরে থেকে কথা বলতে হচ্ছে, এটা হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টের। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন সেই কামনা করি। তিনি বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, ক্রাইমের ধরনটাও বদলে যাচ্ছে। আগে এক ধরনের হতো এখন অন্যভাবে হয়। প্রতিনিয়ত আমরা এটাও দেখতে পাই যত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, প্রযুক্তি যেমন ভালো কাজে ব্যবহার হয়, আবার মন্দ কাজেও ব্যবহার হয়। সেদিকে লক্ষ রেখে আমাদের যারা নিরাপত্তায় আছেন তাদেরকেও সেই আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। কী ধরনের ক্রাইম হচ্ছে সেটা জেনে নিয়ে সেই ক্রাইম কীভাবে প্রতিরোধ করতে হবে, তার জন্য যেমন প্রশিক্ষণ প্রয়োজন প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে ইক্যুপমেন্টসও দরকার। তিনি বলেন, আমরা যতদূর পেরেছি এসএসএফের জন্য সবকিছু করেছি। সব ধরনের ব্যবস্থা, যখন যেটা আধুনিক আসে আমরা সংগ্রহ করার চেষ্টা করি। এখানে শুধু যাকে নিরাপত্তা দেয়া হবে শুধু তাদেরটা নয়, যারা নিরাপত্তা দেবে তাদেরটাও আমার চিন্তা করতে হয়। সেটা যদি চিন্তা না করতাম তাহলে আমি এগুলো কিছুই মেনে নিতাম না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকভাবে একদিকে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায়, আরেকদিকে খুনিরা ক্ষমতায় সেই পরিবেশে বাংলাদেশে যখন এসেছি তখন তো আমরা কিছুই ছিল না। আলাদা গাড়িও ছিল না। আমি সেটা চিন্তাও করিনি। বাসভাড়া করে চলেছি, রিকশা-ভ্যানে চলেছি, নৌকায় চলেছি, সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি। কী কারণে করেছি- একটাই কারণ এদেশের জন্য কিছু করতে হবে। আমার বাবা যে কাজটা সম্পূর্ণ করতে পারেননি সেটা আমাকে সম্পূর্ণ করতে হবে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে তারা আমাকে ভোট দিয়েছে, নির্বাচিত করেছে, সুযোগ দিয়েছে তাদের সেবা করার। তিনি বলেন, আজ এই করোনাভাইরাসটা এসে আমাদের সকল অগ্রযাত্রাটা থামিয়ে দিয়েছে। সে জন্য সত্যিই মাঝে মাঝে কষ্ট হয়।এই একটা ভাইরাস, সারা পৃথিবী, যত শক্তিধর দেশ হোক, কত শক্তিধর দেশ তারা কথায় কথায় বোম্বিং করতো বা গুলি করতো, মানুষ মারতো আজকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বোম্বিং করতে পারে না, গুলি করতে পারে না, কিছুই করতে পারে, তারা আজকে স্থবির। শেখ হাসিনা বলেন, শক্তিশালী দেশ অর্থনৈতিকভাবে, তাদের অর্থসম্পদ কোথায় আছে, আজ কোথায় সেই ধনী দেশ, অর্থসম্পদ কোনো কাজে লাগছে না। কারণ করোনাভাইরাস। এই একটা ভাইরাস যাকে দেখা যাচ্ছে, অদৃশ্য একটা শক্তি, জানি না আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কী খেলা। সেই অদৃশ্য শক্তির ভয়ে সারাবিশ্ব আজ স্থবির, সারাবিশ্ব স্থম্ভিত। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মৃত্যু। করোনাভাইরাস সব শক্তিকে স্থবির করে দিয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এসএসএফ সদস্যদের একদিনের বেতন অনুদান হিসেবে দেয়া হয়। এসএসএফ ডিজি প্রধানমন্ত্রীর হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন।
Share: