নুসরাত আহমেদঃ মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় আবৃতি,হাতের লিখা,চিত্রাঙ্কন,সংগীত ও নৃত্য প্রতিযোগীতার।বিশাল আয়োজন করে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করা হয়।
আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা,পুরস্কার বিতরনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে ২০ শে ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুরিহাড্ডায় মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডে নিহত শহীদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়।সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সন্চালনার কাজ করেন নারায়নগন্জ কলেজের শিক্ষক আরিফ মিহির। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত ও গীতাপাঠ করা হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়নগন্জ জেলা প্রশাসক জনাব রাব্বি মিয়া।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ,নারায়নগন্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং নারায়নগন্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক রুমন রেজা,নারায়নগন্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও নারায়নগন্জ রাইফেল ক্লাবের সাধারন সম্পাদক খালেদ হায়দার খান কাজল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপসচিব জসীম উদ্দীন হায়দার এবং শুভেচ্ছা ভাষন দেন ভারপ্রাপ্ত এ.ডি.সি রেজাউর বারী।
শুভেচ্ছা ভাষন দেয়ার একপর্যায়ে এ.ডি.সি সাহেব সবার উদ্দেশ্য বিদায় চান।তিনি জানান প্রমোশনসহ তার রথবদল হয়েছে গাজীপুরে।তিনি সহকর্মী এবং নারায়নগন্জ বাসীর কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেন। নারায়নগন্জ আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ রাসেল তার বক্তব্যে তুলে ধরেন নারায়নগন্জে ভাষা আন্দোলনের সূচনার ধারাবাহিকতা। অধ্যাপক রুমন রেজার বক্তব্যে উঠে আসে নারায়নগন্জের রাজনৈতিক ঐতিহ্য বায়তুল আমানের খান সাহেব ওসমান আলীর পরিবারের অবদান এবং সমসাময়িক মরগ্যান স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ আপার ভাষা আন্দোলনে অবদান।
আলোচকদের কথায় উঠে আসে অনেক তথ্য যা নতুন প্রজন্মের জানা দরকার। মমতাজ আপা ভাষা আন্দোলনে যোগ দেয়ায় তার স্বামী তাকে তালাকের হুমকি দেন তারপরও তিনি ভয়ে ভীত না হয়ে আন্দোলনে অকপটে যোগ দেন।এবং তখন তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে,অবসান হয় সংসারী জীবনের। নারায়নগন্জ চেম্বার অব কমার্স এবং রাইফেল ক্লাবের সাধারন সম্পাদক খালেদ হায়দার খান কাজল তার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আরজি রাখেন নিমতলা এবং চকবাজারের মত এমন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে র সূচনা যাতে না হয়।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকা গুলোতে যাতে আগেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের বক্তব্যে প্রাধান্য পায় সমাজের সকল স্তরে যেন বাংলাভাষার সার্বিক চর্চা এবং ব্যবহার করা হয়। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ানোর প্রবনতা থেকে সমাজকে ফিরাতে হবে এবং ঘর থেকে শুরু করতে হবে বাংলাভাষার শুদ্ধ চর্চা। নারায়নগন্জ শহরের অলঙ্কার প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার বক্তব্যে ও উঠে আসে চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের কথা,নারায়নগন্জ জেলায় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং বাংলা ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার ও চর্চা। সব শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি উপসচিব জসীম উদ্দীন হায়দার সবাই ধন্যবাদ জানিয়ে তার বক্তব্য দেন।তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেন নারায়নগন্জ শহরের সকল ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হোক।