ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দুই দিন ব্যাপী বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ll
শাদাব হাসিন,প্রেসওয়াচ রিপোর্ট:৩০ আগস্ট, শনিবার শেষ হয়েছে দুই দিন ব্যাপী ‘বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ২০২৫’ এর দ্বিতীয় দিন। ঢাকাভিত্তিক থিংক ট্যাংক ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স (দায়রা)-এর উদ্যোগে আয়োজিত কনফারেন্সের এ আসরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাংলাদেশ অ্যাট ক্রস রোডস: রিথিংকিং পলিটিক্স, ইকোনমিক্স, জিওপলিটিকাল স্ট্র্যাটেজি’।
বেলা ১২.২০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় ‘রোহিঙ্গা রিফিউজি ক্রাইসিস: রিজিওনাল সিকিউরিটি রিস্কস, রিপ্যাট্রিয়েশন পাথওয়েজ, এণ্ড লাইভলিহুড চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামে প্যানেল ডিসকাশন। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, সেমিনারটিতে সঞ্চালনা এবং মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দ্য সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. ইমাদুল ইসলাম, আরিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. ফাহিম হোসাইন, সেন্টার ফর বে অব বেঙ্গল স্টাডিজের উপদেষ্টা, রাষ্ট্রদূত (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আ করিম, রিফিউজি রিলিফ এণ্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনার (আরআরআরসি)-এর কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
শামা ওবায়েদ বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু কেবল কূটনীতির বিষয় নয়, রাজনীতির বিষয় এটি”। দুপুর ১২ঃ২০ মিনিটে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারটির এমসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর ডক্টর মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দিক (দিপু সিদ্দিকী)
রোহিঙ্গা সংকটকে নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে উপস্থাপন করা ভুল হস্তক্ষেপের আমন্ত্রণ জানাতে পারে: কুগেলম্যান
৩০ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকস (DAIRA) আয়োজিত বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ২০২৫-এ অতিথিরা বক্তব্য রাখেন।
আমেরিকান পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান সতর্ক করেছেন যে রোহিঙ্গা সংকটকে মূলত নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে উপস্থাপন করলে “ভুল ধরনের হস্তক্ষেপ” আমন্ত্রণ পেতে পারে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ২০২৫-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশকে আহ্বান জানান বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগ উত্থাপনের পাশাপাশি সংকটের মানবিক দিকটিও জোরালোভাবে তুলে ধরতে।
“ঝুঁকিটা হলো—একটি মানবিক সংকটকে নিরাপত্তা ইস্যুতে রূপান্তর করা। এতে ভুল ধরনের হস্তক্ষেপ ঘটতে পারে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হলো একটি ভারসাম্য খুঁজে বের করা—এমনভাবে যাতে নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক সংযোগের মাধ্যমে বৈশ্বিক মনোযোগ আকৃষ্ট করা যায়, তবে মানবিক সংকট হিসেবে মূল বিষয়টি হারিয়ে না যায়,” বলেন কুগেলম্যান, যিনি সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক।
তিনি “রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট: আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকি, প্রত্যাবাসনের পথ এবং জীবিকা সংকট” শীর্ষক একটি সেশনে বক্তব্য রাখছিলেন, যা আয়োজন করেছিল ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিকস (DAIRA)।
তিনি বলেন, সচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা কেবল মানবিক আবেদনেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়; বরং এই সংকটকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি ও নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
“বাংলাদেশ একটি বিরল পরিস্থিতির সম্মুখীন—মিয়ানমারে একটি সহিংস অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠী পুরো সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি প্রায় বিশ্বের অন্য কোথাও নেই,” কুগেলম্যান উল্লেখ করেন।
আমেরিকান এই পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক আরও বলেন, বাংলাদেশি নেতারা ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে দেশের সবচেয়ে জরুরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের বাইরে এ নিয়ে সচেতনতা খুবই কম।
“বাস্তবে শুধু জাতিসংঘ ও কিছু সাহায্য সংস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে,” তিনি বলেন।
কুগেলম্যান ঢাকার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন যেখানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক মনোযোগ বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, “তিনি আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য রেখেছেন।”
“তিনি আরও সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন, এমনকি অন্য দেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করারও অনুরোধ করেছেন। কিন্তু বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এটিকে অত্যন্ত ক
ঠিন করে তুলেছে,” তিনি যোগ করেন।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুমে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে গুম ও খুনের স্বীকার হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশন “পেপার প্রেজেন্টেশন সেশন্স” শুরু হয়। এই সেশনে গবেষকগণ তাদের গবেষণাপত্র উপস্থান করেন।