প্রেস ওয়াচ ডেস্কঃ
সারাহ ইভেরার্ড নামের এক তরুণীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ব্রিটিশ আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লন্ডনের সেন্ট্রাল অপরাধ আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে তার জন্য কোনো প্যারোলের সুযোগও রাখা হয়নি। গেল ৩ মার্চ দক্ষিণ লন্ডনে নিজের বাড়ি থেকে হেঁটে বন্ধুর বাসায় যাচ্ছিলেন সারাহ ইভার্ড। এ সময়ে তাকে অপহরণ করে ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েন কৌজেনস। হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে সে।
ওয়েন কৌজেনস লন্ডনের মহানগর পুলিশের অভিজাত কূটনৈতিক সুরক্ষা ইউনিটে কাজ করত। এবার বাকি জীবন তাকে কারাগারেই কাটাতে হচ্ছে।
রায় পড়ার সময় এই অপরাধকে বিভৎস বলে আখ্যায়িত করেন বিচারক আদ্রিয়ান ফুলফোর্ড। তিনি বলেন, এই পুলিশ কর্মকর্তার সত্যিকার অর্থে অনুতপ্ত হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
এটিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলা বলে উল্লেখ করে বিচারক আরও জানান, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই তার প্রাপ্য। ব্রিটিশ আইনে এর চেয়ে বেশি কোনো সাজা নেই।
রায় পড়ার সময় ৪৮ বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। ফুলফোর্ড বলেন, সে এক নিঃসঙ্গ নারীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে। এটি ভাষায় প্রকাশ অযোগ্য ভয়াবহ অপরাধ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিচারক আরও বলেন, বিবাদী আগাম পরিকল্পনা করে এই অপরাধ সংঘটিত করেছে। সে যখন সারাহ ইভার্ডের মুখোমুখি হয়, তখন এই নারীর আত্মরক্ষার কোনো উপায় রাখেনি।
দুদিনব্যাপী সাজার শুনানি শুরু হয়েছিল বুধবার। আদালতে জেনেছে, কীভাবে ভুয়া গ্রেপ্তারের কথা বলে ৩৩ বছর বয়সী সারাহকে গাড়ি তোলে ওয়েন কৌজেনস।
তার বিরুদ্ধে করোনার লকডাউন ভাঙার অভিযোগ এনে তাকে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর গ্রেপ্তার করে লন্ডনের বাইরে অনেক দূরে নিয়ে যায়। সেখানে সারাহকে ধর্ষণ করে হত্যা করে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে কৌজেনস।
সারাহ নিখোঁজ হওয়ার পর দক্ষিণপূর্ব লন্ডন থেকে প্রায় ৬০ মাইল দূরে কেন্টের আশফোর্ডের বনাঞ্চলে তার দেহাবশেষ পাওয়া যায়। তার বাবা বলেন, আমাদের ওপর দিয়ে যে যন্ত্রণা ও নির্যাতন বয়ে গেছে, তার সঙ্গে কোনো সাজার তুলনা চলে না।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, নারীদের সুরক্ষায় মহানগর পুলিশ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।