pl

এ উৎসবে অংশ নিতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন নারী, পুরুষ, কিশোর, কিশোরী বই হাতে নিয়ে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়। অনেকেই তাদের শিশু সন্তানকে সঙ্গে করে আনেন। এ সময় একে অন্যের সঙ্গে তাদের নিজ নিজ বইটি বিনিময় করে।

বই বিনিময়ের পাশাপাশি একে অন্যের বিষয়ে খোঁজ খবরও নেন আগতরা। কারণ আয়োজকদের চাওয়া ছিল, যান্ত্রিক এ শহরে বইকে কেন্দ্র করে মানুষের সঙ্গে মানুষের একটি সামাজিক মিথস্ক্রিয়া তৈরি হোক।

এ আয়োজনে সব শ্রেণিপেশার মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, নাট্য নির্দেশক ও অভিনেতা অনন্ত হিরা, নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, পলান সরকারে ছেলে হায়দার আলী সরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক নোমান রবিন, আবৃত্তি শিল্পী ও প্রশিক্ষক মীর বরকত প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই মেঘের ধাক্কার পরিচালক জহির রায়হান বলেন, ‘বর্তমান সময়ে আমাদের যে সামাজিক অবক্ষয়, নীতি নৈতিকতার পচন, এ সমস্ত কিছুর হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে পারে বই। পলান সরকার সেই কাজটি আজীবন করে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘পলান সরকার এমন একজন ব্যক্তি, যিনি তার জীবনের সমস্ত সহায় সম্বল বিকিয়ে দিয়ে নিজের জীবনটা শিক্ষার জন্য উৎসর্গ করেছেন। ৯০ বছর বয়সেও তিনি প্রতিদিন দশ-বারো কিলোমিটার হেঁটে মানুষের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিয়েছেন।’

মেঘের ধাক্কার পরিচালক বলেন, ‘আজ এই সময়ে যখন শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দেওয়া হচ্ছে, ছাত্রের হাতে শিক্ষক খুন হচ্ছে, তখন বুঝতে হবে আমাদের সমাজের পচন কোন মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাই এই সময়ে, এই দেশে একজন পলান সরকার খুবই প্রয়োজন।’

আরও পড়ুন- পলান সরকারের জন্মদিনে নান্দিক পাঠাগারের বই নিয়ে আয়োজন

এ আয়োজনের শেষ মুহূর্তে ঘটে অন্যরকম একটি ঘটনা। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরও দেখা গেছে অনেকেই অনুষ্ঠানস্থলে থেকে একে অন্যের সঙ্গে বই নিয়ে আলাপ আলোচনা করছে। কেউ নতুন বই পেয়েছে, কেউ নতুন বন্ধু পেয়েছে।

পলান সরকারের আদর্শ ও চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতি বছরই এই দিনে বই বিনিময়ের উৎসব চলবে এবং আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এ উৎসবের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন জহির রায়হান।