এমভি মানামী লঞ্চের কর্মচারী বাবুল মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তাদের লঞ্চে ডেকের ভাড়া সাড়ে তিনশর জায়গায় ২০০ টাকা করা হয়েছে। দেড় হাজার টাকার সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার টাকা এবং ডবল কেবিন আড়াই হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার করা হয়েছে। কারণ যাত্রী আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। টাকা একটু বেশি খরচ হলেও সবাই এখন পদ্মা সেতু দিয়ে যেতে আগ্রহী। নতুন নতুন সবাই পদ্মা সেতু দিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রী তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, সিঙ্গেল কেবিনের যাত্রী এখন বাসে চলে যাচ্ছে। তিন ঘণ্টায় ঢাকা যেতে পারছে। তাহলে তারা কেন পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করবে? লঞ্চের সংখ্যাও কমেছে বলে জানান তিনি।
বাবুল মিয়া বলেন, প্রতিদিন বরিশাল থেকে সাতটি লঞ্চ ছেড়ে যায় আর ঢাকা থেকে বরিশালের পথে আসে সাতটি লঞ্চ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বরিশাল থেকে পাঁচটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঢাকা থেকে এসেছে চারটি। আর শুক্রবার (১ জুলাই) বরিশাল থেকে ছেড়েছে চারটি লঞ্চ।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু ব্যবহারকারী বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ
বাবুল আরও বলেন, ঢাকা-বরিশাল যাওয়া-আসা করতে একটি লঞ্চের বিভিন্ন ফি ও তেল খরচসহ সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা খরচ হয়। টাকা না উঠলে মালিকরা লঞ্চ চালাবে কীভাবে? আগে একটি লঞ্চের ডেকে পাঁচশ থেকে সাতশ যাত্রী আসত। সেখানে শুক্রবার এসেছে দুইশ থেকে আড়াইশ যাত্রী। ভাড়াও কমেছে। কিন্তু খরচ তো কমেনি।
তবে ঈদের সময় কেমন চিত্র দাঁড়ায় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন বলে জানান লঞ্চের কর্মচারীরা।
বাবুল বলেন, লঞ্চে যাত্রী ফেরাতে মালিকরা ঈদের পর সভা করবেন। সেই সভায় নানা পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে শুনেছি। তবে যাত্রী কমে যাওয়ায় হতাশ হননি মালিকরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং সুন্দরবন লঞ্চের মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রী একটু কমেছে। ব্যবসায়ীক কারণে ভাড়া একটু কমানো হয়েছে। তবে এটা কোনো সমস্যা না। প্রথম প্রথম দুই-এক মাস যাত্রী একটু কম হবে। পরে আবারও স্বাভাবিক হয় যাবে।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লঞ্চে পরিবার-পরিজন ও মালপত্র নিয়ে শান্তিতে যাওয়া যায়। বাসে সেটা সম্ভব না। যাত্রীরা লঞ্চেই ফিরে আসবে বলে আমি আশাবাদী।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু চালু হলেও শরীয়তপুরে সড়ক উন্নয়ন শেষ হয়নি
আসন্ন ঈদের তিন দিন আগে লঞ্চে বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে বলে জানান তিনি।
রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে এবার যাত্রী কম হবে। সেই বাস্তবতা ইতোমধ্যে দেখেছি। তাই ঈদে কী সংখ্যক যাত্রী হবে তা আগে ভাগে অনুমান করতে পারছি না। এই ঈদে অভিজ্ঞতা অর্জন করব।