চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের এক উপ-কমিশনারের বিরুদ্ধে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কাছে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আমদানি করা একটি জাহাজের শুল্কায়নের সময় উপ-কমিশনার তার সহযোগীর মাধ্যমে ঘুষ দাবি করেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ করা সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফজলে এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসেন সোমবার (৩০ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সম্প্রতি কর্ণফুলী লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান দুটি জাহাজ আমদানি করে। এর মধ্যে একটি জাহাজ গত রবিবার খালাস করা হয়েছে। অন্যটি খালাসের জন্য কাস্টম হাউজে আমদানির ফাইল শুল্কায়ন করতে গেলে কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আব্দুল আলীম আমাদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেওয়ায় তিনি আমাদের ফাইলটি আটকে দেন। “ফাইলটি দেখতে হবে” বলে প্রথমদিন কাটিয়ে দেন। এরপর বৃহস্পতিবারও তিনি ফাইলটি ছাড়েননি। ওই দিন তিনি ফাইল দেখে জাহাজের ডিডব্লিউটি নিয়ে আপত্তি তোলেন। জাহাজটির যেসব কাগজপত্র আছে সবগুলোতে ২২ হাজার ডিডব্লিউটি উল্লেখ আছে। সেই হিসেবে আমরা ২২ হাজার ডিডব্লিউটি ধরে শুল্কায়ন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি নেট ঘেটে বলেন এটা ২৪ হাজার ডিডব্লিউটি। আমরা তা মেনে নিয়ে ২৪ হাজার ধরেই শুল্কায়ন করতে বলেছি। কিন্তু তিনি সেটি করেননি, উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে নোটিশ করে দেন। ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগ এনে জরিমানা করবেন জানান।’
শুল্কায়নের জন্য কাস্টম হাউজে প্রতি চালানে ঘুষ দিতে হয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমদানি করা পণ্য চালান খালাসের জন্য শুল্কায়ন করার সময় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। উপ-কমিশনার নেন ৫০ হাজার, যুগ্ম কমিশনার নেন এক লাখ টাকা। তবে বর্তমান কমিশনার ও যুগ্ম-কমিশনার ঘুষ নেন না। প্রথম জাহাজটি খালাসের সময় আমরা উপ-কমিশনার আব্দুল আলীম সাহেবকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। এ কারণে তিনি আগে থেকে আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরপর এবার দিতে না চাইলে তিনি ক্ষেপে যান। উপ-কমিশনার বলেন, “ঘুষ কে নেবে, কে নেবে না, এটা তাদের ব্যাপার; কিন্তু আমারটা আমাকে দিয়ে দিতে হবে”।’
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার কাস্টমস কমিশনার মো. ফখরুল আলম সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান, আমদানিকারকের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তাকে তার অফিসে ডেকে তাদের বক্তব্য শোনেন। এ সময় উপ-কমিশনার ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে বৈঠকে ফখরুল আলম ঘুষ চাওয়ার কী প্রমাণ আছে জানতে চান। তখন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপ-কমিশনারের পিয়ন রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের কথাবার্তার অডিও শুনিয়ে দেন।
এ সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত কাস্টমস উপ-কমিশনার আব্দুল আলীমের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এরপর এ বিষয়ে জানতে কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলমকে কল করা হলে তিনিও রিসিভ করেননি।